গোল্ডেন এ-প্লাসের পাগলা ঘোড়ায় শাওয়ার করবার পাশাপাশি শিক্ষক-অভিভাবকের ১০ নম্বর সতর্কবার্তা এবং কোচিং সেন্টার বা টিউশন কেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার ফাঁদের মধ্যেও থেকেও যে-সব শিক্ষার্থী বিভিন্ন কো-কারিকুলার কার্যক্রম, অপাঠ্য বই পড়ে, অকাজের মাঝে থেকে মানবিকতা, সামাজিকতা, মন ও শরীরের পরিচর্যার রসদ খুঁজছে, তাদেরকে উদ্দীপ্ত করতে 'শিখি খেলতে খেলতে' বা ’আনন্দে শিখি, আলোয় বাঁচি’ স্লোগানের 'এডুকেশন গেম' "স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার"। শুধু নির্দিষ্ট সিলেবাসের গোল্ডেন এ-প্লাস টাইপের মেধাবী স্টুডেন্ট নয়, সিলেবাস ও সিলেবাসের বাইরের বই এবং কো-কারিকুলারে পারদর্শী " মাল্টি ট্যালেন্ট" শিক্ষার্থী খুঁজে বের করে মূল্যায়ন করবার প্রতিযোগিতাই "স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার"! এটা এমন একটি প্লাটফর্ম, যেখানে শেখা ও আনন্দ এক সাথে। হাসি আনন্দে 'খেলতে খেলতে শেখা'র প্লাটফর্মই 'স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার'!
স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার বিশ্বাস করে- তথাকথিত অকাজ (কো-কারিকুলার কার্যক্রম !) ও অপাঠ্য বইগুলি (সাহিত্য, কবিতা, নাটক, ইত্যাদি !!) সাহিত্য বা শিল্পের বই, মানুষের মন ও হৃদয়কে প্রসারিত করে, আনন্দ দেয় এবং জীবনের গভীরতর উপলব্ধিতে সাহায্য করে। আমাদের আনন্দ দেয়, আমাদের কল্পনাশক্তি বাড়ায়, এবং আমাদের আবেগকে নাড়া দেয়, জীবনকে আরও অর্থবহ করে তোলে এবং আমাদের মনকে আরও বিকশিত করে। স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার স্বপ্ন দেখে- অট্টালিকার কারাগার ও দম বন্ধ করা স্কুল নামক 'অভিশাপ' থেকে মুক্ত হয়ে নান্দনিক, আনন্দ, সৃজনশীল ও স্বপ্নে ভরা টিন, তালপাতা বা খড়ের স্কুলের; যে স্কুলে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকবে শিক্ষার্থীরা। স্বপ্ন দেখে, সেই শিক্ষাব্যবস্থার, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্কুল বন্ধ হলে সেটিকে খুলে দেবার জন্য আন্দোলন করবে। বর্তমানে আমাদের ছেলেমেয়েরা জানে, স্কুল একটি অভিশাপ। তাই তারা স্কুলে যেতেই চায় না মোটেও !!
স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার: শুরুর গল্পটা
নতুনভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের অভিপ্রায় ও তৎকালীন রাজ টেক্সটাইল স্কুল কর্তৃপক্ষের অতি প্রশ্রয় ও ভালোবাসায় ২০১৪ সালে শুরু হয় স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার, সিজন-১। তারপর ২০১৬ ও ২০১৮ সালে আরও দুটি সিজন হয় এখানেই। ২০১৮ তে পরিকল্পনাতে আসে রূপান্তর, সাথে লাগে প্রযুক্তির ছোঁয়া। ব্যক্তি উদ্যোগে অফলাইন থেকে অনলাইনে রূপান্তরিত হয় প্ল্যাটফর্মটি, তৈরি করি ওয়েবসাইট। অনুষ্ঠানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায় শিক্ষার্থীর কাছে। উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসও স্বাগত জানায় এই আইডিয়াটিকে। স্টুডেন্ট অব দা ইয়ারের আইডিয়া কাস্টমাইজ করে যশোরের কয়েকটি স্কুল কলেজে চালু হয় স্টুডেন্ট অব দা ক্লাস, স্টুডেন্ট অব দা মান্থ ও টিচার্স অব দা ইয়ার। অন্যদিকে, অসুস্থ শিক্ষাব্যবস্থার তাপ, করোনার ঝড়, ব্যক্তিগত অসুস্থতা ও সীমাবদ্ধতায় বন্ধ হয়ে যায় অনুষ্ঠানটি। বর্তমানে আরও বড়ো পরিসরে ও রূপান্তরিত পরিকল্পনায় ফিরে আসছে আবার “স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার”।
আশা করি, সকলের সহযোগিতা ও পরিকল্পনায় নতুন প্রাণ পাবে 'স্টুডেন্ট অব দা ইয়ার'। সম্মিলিত প্রচেস্টায় হয়ত আবার কোনো একদিন তৈরি হবে প্রাণবন্ত, সৃজনশীল, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, মানবিক ও স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনা !!